জিওন কাঠি মরন কাঠি (আধুনিক ঠাকুরমার ঝুলি)

রাজকুমারী কলাবতী

ডালিম কুমারের মন টা ভাল নেই, সকাল থেকে শুধু গালি শুনে জাচ্ছে। ডালিমকুমার নবীঙ্গঞ্জের রাজকুমার, যদি ও রাজ্য অনেকদিন আগেই সরকারের হাতে, কিন্তু রাজকুমার, রাজকুমারি থাকে। ডালিমকুমারের বাবা, কাকা রা সব পয়সা মাল আর মেয়ের পিছনে খরচা করে দিয়েছে, তাই ডালিমকুমার এখন কলকাতায় একটা কলসেন্টারে কাজ করে। আজ সকালে সে প্রচুর গালি শুনেছে ম্যানেজারের কাছ থেকে, একে রিসেশন টাইম, কিছু বলাও জায়না। ম্যানেজার গম্ভীরকুমার আগে ওদের ই প্রজা ছিল, এখন ডালিমকুমারকে খুব চাটে। আজ শুক্রবার তাই অফিস থেকে বেরিয়ে নবীঙ্গঞ্জে এসছে, কিন্তু মহলে জেতে ইচ্ছে করছে না। কি হবে গিয়ে? ভাবছে একটা ফ্ল্যাট নিয়ে নেবে সস্তায় রাজারহাটে। সামনে একটা বটগাছ ডালিমকুমারের কি মনে হল ও ওখানেই শুয়ে পড়ল। ম্যানেজার কে খিস্তি করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছে ডালিমকুমার নিজেও জানেনা।

মাঝরাতে একটা শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল, গাছের উপর কারা জেন কথা বলছে।

– হারে, ব্যাঙ্গমী, নীচে কে শুয়ে আছে?

– ও বাবা জানিস না? ওতো নবীঙ্গঞ্জের রাজা ডালিমকুমার।

– সেকি ওর এই অবস্থা।

– হা রে, একেতো বাবা কাকা মদ, জুয়ায় সব উড়িয়েছে, এ আবার শেয়ারে সব উড়িয়েছে।

– বেশ হয়েছে, হিসেবী হয়ে না চল্লে এই হয়।

– এরকম বলতে নে ব্যাঙ্গমা, আর জাই হক ও তো রাজার ছেলে, এসব তো একটু করবেই, ওর কি কোন উপায় নেই আবার বড় হবার?

– থাকবেনা কেন, উপায় আছে কিন্তু খুব কঠিন।

– কি সে উপায়?

– ওই সামনের দীঘী দেখতে পাচ্ছিস?

– ও তো পচা ডোবা।

– হা ওটাই আগে ছিল কালদীঘী, ওই দীঘির নীচে রাজকুমারী কলাবতী বন্দী হয়ে আছে, ও যদি ওখানে গিয়ে ওকে উদ্ধার করে এনে বিয়ে করতে পারে তবেই আবার বড়লোক হতে পারবে।

– কিন্তু ওটাতো ভয়ানক জায়গা, সব রাক্সস দের বাসা, ওদের তো মারতে হবে।

– ধুর ওরাও বুড়িয়ে গেছে, কিছুই করতে পারবে না। আসল পরীক্সা হল রাজকুমারীকে মানানো।

– হুম বুঝলাম, এদিকে সকাল হয়ে গেচ্ছে, চ ঘুমিয়ে পড়ি।

ডালিমকুমারের বিশবাস হচ্ছিল না কথাগুলো, কিন্তু একবার দেখতে কি হয়, এই সব সাত পাচ ভেবে ডালিমকুমার পচাপুকুরে ঝাপ দিল।

পচাপুকুরের নীচে গিয়ে এটাকে আর পচা পুকুর নয়, কালদীঘি না কি জেন বলল ব্যাঙ্গমা, সেটাই বলতে ইচ্ছে করছিল। একেই বলে রাজমহল। বিশাল বড় একটা খাট, বিশাল ঘর, এক কোনে Panasonic একটা LCD TV, PS3, Bose Home Theatre, কি নেই এখানে। রাজকুমারী খাটের উপর ঘুমিয়ে আছে। ডালিমকুমার গিয়ে রাজকুমারী ডা্কল কয়েকবার,কোন উত্তর নেই, শালী রাক্সস দের সাথে থেকে থেকে নিজেও তাই হয়ে গেছে। ডালিমকুমার রাজকুমারী কে দেখতে লাগল একভাবে, কি সুন্দর দেখতে, এ যদি ওর ভাগ্যে জোটে তো হয়েই গেলো। টাকা পয়সা চাইনা, ওর এই রাজকুমারী কেই চাই। নামটা বড্ড সেকেলে, কলাবতী, কিন্তু ওরি বা কি আধুনিক নাম! এইসব ভাবতে ভাবতে ্কখন এক ঘন্টা হয়েগেছে, রাজকুমারীর ঘুমতো ভাংছেই না। একটু কাছে গেল ডালিমকুমার। বিছানার উপর একটা রিমোট কন্ট্রোল, AC-র মত। দুটো বাটন, Asleep, আর Awake। কি ভেবে কে জানে ডালিমকুমার Awake বাটন টিপল।

– কে তুমি? এ্কটা মেয়ের গলা শুনে ডালিমকুমার ভয় পেয়ে লাফিয়ে উঠল। রাজকুমারী জেগে গেছে।

– আরে বাপরে, তুমি কি রোবোট নাকি? রিমোট কন্ট্রল্ড?

– না, তবে আমি ওটাদিয়েই জাগি আর ঘুমাই, কিন্তু তুমি কে?

– আমি ডালিমকুমার, তোমাকে বাচাতে এসেছি।

– ও কেন?

– তোমায় বিয়ে করব তাই।

– আচ্ছা! তোমার ইচ্ছা বেশ বলতে হয়। কিন্তু এখানে সব রাক্সুসী রা আছে তাদের মারতে পারবে?

– কি মারতে হবে কেন? গান্ধীগিরি দিয়ে হবেনা?

– না হবেনা, তুমি এত ভীতু কেন? এত ভীতু আমায় কি করে বিয়ে করবে?

– কি করন বাংগালী তো।

–  হা হা, তো এখন কটা বাজে?

– দুটো বাজে।

– ওদের আসতে এখন চার ঘন্টা আছে। তো এর মধ্যে আমায় impress তো করতে হবে। কি করবে বল?

– Strip করব?

– ধুর, তোমার বডি কোথায়? এক কাজ কর আমায় নিয়ে চার ঘন্টার জন্য বাইরে নিয়ে চল দেখি।

– ঠিক আছে।

Part 2

ডালিমকুমার রাজকুমারী কলাবতী কে নিয়ে বাইরে এ্ল।

– আমি বারগার খাব, MacD তে।

– তুমি MacD র নাম কোথা থেকে শুনলে?

– আমার এক চ্যাট ফ্রেন্ড আছে শ্রাবনী বলে। ওর এক বন্ধু আছে, খুব inteligent। ওর সেই বন্ধু একটা software বানিয়েছে,জেটা দিয়ে শ্রাবনী আমার রিমোট কন্ট্রোল operate করে। ওর সাথে আমি মাঝে মাঝে জাই।

– মা…

– ওই গালি গুলো জানি আমি।

– সেটাও ওই শিখিয়েছে?

– হা, তুমি কি করে জানলে?

– তোমার বন্ধুর সাথে দেখা করতে ইচ্ছা করছে খুব।

– পরে, আগে আমাকে উদ্ধার কর, আমায় বিয়ে কর তারপর। ছেলেদের বিশবাস নেই। এমনিতেই শ্রাবনী এ্কটু বেশীই সেক্সি।

– চল তোমার ম্যাকডি এসে গেছে।

কলাবতী বড্ড বেশী কথা বলে।খেতে খেতেও এত কথা বলে। এখন আবার ম্যাডামের সিনেমা দেখতে ইচ্ছে করছে। আর কত ক্রেডিট কারড ব্যাবহার করবে!

– আমায় আইস্ক্রীম খাওয়াবে না?

– এখানে তো পাওয়া জায়না সোনা।

– বাস্কিন রবিন্স এ তো পাওয়া জায়।

– তুমি ওটাও চেন? বড্ড ধড়ীবাজ মেয়ে রে ভাই, এট অবশ্য মনে মনে বলল।

– হা। হি হি হি।

ওই non intelectual হাসি, এর সাথে আমায় সারাজীবন কাটাতে হবে? ভাবল ডালিমকুমার।

– কোই চল।

– হা জাচ্ছি, চল। আবার কিছু পয়সার শ্রাদ্ধ।

আইস্ক্রীম খেতে খেতে ডালিমকুমার ভাবতে লাগল, সব মেয়েই শালা এক, ম্যাকডি, বাস্কিন রবিন্স, সিনেমা। আবার একে বিয়ে করলে, ওর পয়সাতে খেতে হবে, ওতো সারাজীবন আমার মাথায় বসে নাচবে।

– একটা কথা ্বলব কলাবতী?

– জানি, তুমি আমায় ভালোবাস তাই তো?

– না, তুমি আসলে কোন স্পেশাল কেউ নও। তোমায় না চিনলে হয়তো তোমার প্রেমে পরে জেতাম, কিন্তু আসলে আমি তোমায় বিয়ে করতে পারব না, ভাল হত যদি তুমি আমার dream girl হয়েই রয়ে জেতে।

– Coward, কলাবতী একটা পিচকারী নিয়ে ডালিমকুমারের মুখে জল ছিটাতে থা্কল, গরম জল।


ঘুম ভেংগে গেছে ডালিমকুমারের, ডালিমকুমার বটগাছের নীচে শুয়ে আছে, আর একটা কুকুর ওর মুখের সামনে তিন পায়ে খাড়া। কি করছে সেটা পাঠক ভালোই বুঝতে পারছেন।

________________

Thanks Sayantan for the concept.

This post is just for fun, please forgive if it hurts anybody or community. I respect Mr. Dakshinaranjan Mitra Majumdar and the original Thakurmar Jhuli.

1 Comment

Leave a comment